সহজ হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন: ছবি ও টিপস
আপনার কি হাতের পিছনের জন্য সুন্দর মেহেদী ডিজাইন খুঁজে পেতে কষ্ট হয়? অনেকে মনে করেন, হাতের পেছনে মেহেদী লাগানো বেশ কঠিন। কিন্তু আজকের এই লেখায় আমরা কিছু সহজ ডিজাইন নিয়ে কথা বলবো, যা আপনারা নিজেরাই করতে পারবেন। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, একটু অনুশীলন করলেই চমৎকার হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন করা সম্ভব।
হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন কেন জনপ্রিয়?
হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। এর কারণ খুব পরিষ্কার: এটি হাতকে আরও সুন্দর দেখায়। যেকোনো উৎসব বা অনুষ্ঠানে এটি একটি বিশেষ ছোঁয়া যোগ করে। ব্যক্তিগতভাবে, আমি দেখেছি ঈদ বা বিয়েতে যখন হাতের পেছনের অংশে সুন্দর একটা ডিজাইন থাকে, তখন পুরো সাজটাই যেন পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
| ডিজাইন প্রকার | বৈশিষ্ট্য | উপযুক্ত অনুষ্ঠান |
| ফ্লোরাল ডিজাইন | ফুল ও পাতার নকশা | বিয়ে, ঈদ |
| অ্যারাবিক ডিজাইন | বড় ও খোলা নকশা | যেকোনো উৎসব |
| ম্যান্ডালা ডিজাইন | গোল ও জ্যামিতিক | জন্মদিন, ছোট অনুষ্ঠান |
| ট্র্যাডিশনাল ডিজাইন | পুরোনো নকশা | পূজা, পারিবারিক মিলন |
এই ডিজাইনগুলো হাতের পিছনের অংশে একটি মার্জিত ও সুন্দর লুক দেয়। এটি আপনার সাজকে পূর্ণতা দেয়। এর ফলে আপনি নিজের ব্যক্তিত্বকে আরও ভালোভাবে প্রকাশ করতে পারেন। এই বিষয়টা আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে।
নতুনদের জন্য সহজ মেহেদী ডিজাইন
যদি আপনারা মেহেদী লাগানোর ক্ষেত্রে নতুন হন, তাহলে আমি সবসময় সহজ ও সরল ডিজাইন দিয়ে শুরু করার পরামর্শ দেব। ছোট ছোট ফুল, পাতা বা জ্যামিতিক নকশা আপনাদের জন্য ভালো হতে পারে। আমার মনে আছে, প্রথম যখন মেহেদী লাগানো শুরু করি, এই সহজ ডিজাইনগুলোই আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছিল।
এগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি কম সময়ে লাগানো যায়। নতুনরা এই ডিজাইনগুলো থেকে আইডিয়া নিয়ে নিজেদের সৃজনশীলতা দেখাতে পারেন। এই ধরনের হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন শিখলে ভবিষ্যতে আরও কঠিন নকশা চেষ্টা করা সহজ হবে, বিশ্বাস করুন!
ঐতিহ্যবাহী হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন
ঐতিহ্যবাহী মেহেদী ডিজাইনগুলোতে সাধারণত কলকা, ময়ূর বা দেব-দেবীর ছবি দেখা যায়। এই ডিজাইনগুলো আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের পরিচয়। বিশেষ করে বিয়েতে কনেদের হাতে এই ধরনের ডিজাইন খুব প্রচলিত। আর আমি দেখেছি, এর আবেদন সবসময়ই দারুণ।
এগুলো করতে বেশ সময় লাগে। তবে এর ফলাফল সত্যিই মন মুগ্ধ করে। ঐতিহ্যবাহী হাতের পিছনের মেহেদী সাধারণত খুব বিস্তারিত আর নিখুঁতভাবে তৈরি করা হয়। এতে হাতের সৌন্দর্য অনেক গুণ বেড়ে যায়।
অ্যারাবিক হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন
অ্যারাবিক মেহেদী ডিজাইনগুলো সাধারণত বড় আর খোলা নকশার হয়। এতে ফুল, পাতা আর লতানো প্যাটার্নের ব্যবহার বেশি দেখা যায়। আমার পছন্দের ডিজাইনগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। কারণ এটি খুব দ্রুত লাগানো যায় আর আধুনিক দেখায়।
অ্যারাবিক ডিজাইনগুলো হাতের পিছনের অংশে একটি জমকালো ভাব নিয়ে আসে। এই ধরনের হাতের পিছনের মেহেদী যেকোনো পার্টি বা গেট-টুগেদারের জন্য ভালো।
| অ্যারাবিক ডিজাইনের প্রকার | বর্ণনা | প্রধান বৈশিষ্ট্য |
| ফ্লোরাল অ্যারাবিক | বড় বড় ফুল ও পাতা | দ্রুত করা যায়, আকর্ষণীয় |
| জ্যামিতিক অ্যারাবিক | জ্যামিতিক আকার ও রেখা | আধুনিক, পরিষ্কার নকশা |
| মিক্সড অ্যারাবিক | ফ্লোরাল ও জ্যামিতিকের মিশ্রণ | নানা রকম, আলাদা |
এগুলো ডিজাইন করতে খুব বেশি সময় লাগে না। আর দেখতেও দারুণ লাগে। এই ডিজাইনগুলো যেকোনো অনুষ্ঠানে পরতে পারেন। এগুলো খুব নজর টানে।
ফ্লোরাল হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন
ফ্লোরাল ডিজাইন সবসময়ই জনপ্রিয়। ছোট ছোট ফুল, পাপড়ি আর লতাপাতার সমন্বয়ে তৈরি এই ডিজাইনগুলো হাতের অংশে খুব সুন্দর দেখায়। আমার অভিজ্ঞতা বলে, এই ডিজাইনগুলো খুব কমনীয় আর মেয়েলি হয়।
আপনারা চাইলে বিভিন্ন রঙের গ্লিটার ব্যবহার করে ডিজাইনটিকে আরও আকর্ষণীয় করতে পারেন। ফ্লোরাল হাতের পিছনের মেহেদী যেকোনো বয়সের মেয়েদের জন্য উপযুক্ত। আর এটি কখনোই পুরোনো হয় না।
সিম্পল চেইন মেহেদী ডিজাইন

সিম্পল চেইন ডিজাইন হাতের পিছনের জন্য একটি চমৎকার বিকল্প। এটি সাধারণত হাতের মাঝখান থেকে শুরু হয়ে আঙুল পর্যন্ত একটি চেইন বা ব্রেসলেটের মতো দেখায়। এটি খুব দ্রুত লাগানো যায়। আর খুব বেশি জটিলও নয়।
এই ডিজাইনটি আধুনিক ও মার্জিত দেখায়। সিম্পল চেইন হাতের পিছনের মেহেদী প্রতিদিনের ব্যবহারের জন্যও বেশ ভালো।
ম্যান্ডালা হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন
ম্যান্ডালা ডিজাইনগুলো গোল আর জ্যামিতিক নকশার হয়। এই ডিজাইনগুলো হাতে একটি কেন্দ্রের চারপাশে তৈরি হয়। তারপর ধীরে ধীরে বাইরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এটি দেখতে খুব শান্ত আর গোছানো দেখায়। এটা আমার কাছে বেশ আকর্ষণীয় মনে হয়।
ম্যান্ডালা ডিজাইনগুলো সাধারণত হাতের মাঝখানে বড় করে আঁকা হয়। আর চারপাশে ছোট ছোট নকশা দিয়ে পূর্ণ করা হয়। ম্যান্ডালা হাতের পিছনের মেহেদী একটি ঐতিহ্যবাহী আর আধ্যাত্মিক ছোঁয়া দেয়।
ফিঙ্গার মেহেদী ডিজাইন
আঙুলের জন্য বিশেষ মেহেদী ডিজাইন খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। শুধু আঙুলের ওপরের অংশে ছোট ছোট ডিজাইন বা প্যাটার্ন তৈরি করা হয়। এটি ছোটখাটো অনুষ্ঠানের জন্য ভালো। অথবা যারা হাতে বেশি মেহেদী পছন্দ করেন না, তাদের জন্যও উপযুক্ত।
এই ডিজাইনগুলো খুব সাধারণ আর মার্জিত। ফিঙ্গার হাতের পিছনের মেহেদী দেখতে বেশ আধুনিক লাগে। এটি আপনার হাতের নখ আর আংটির সাথে মানানসই হয়।
গ্লিটার ও স্টোন মেহেদী ডিজাইন
আধুনিক যুগে মেহেদী ডিজাইনে গ্লিটার আর স্টোনের ব্যবহার বাড়ছে। এটি আপনার মেহেদী আরও উজ্জ্বল আর জমকালো করে তোলে। বিশেষ করে পার্টি বা বিয়েতে এই ধরনের ডিজাইন খুব জনপ্রিয়। আমি দেখেছি, এর চমক চোখে পড়ার মতো।
সঠিকভাবে লাগালে এটি আপনার হাতে একটি ঝলমলে লুক দিতে পারে। গ্লিটার ও স্টোন হাতের পিছনের মেহেদী আপনার উৎসবের মেজাজকে আরও বাড়িয়ে তুলবে।
ব্রাইডাল হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন
বিয়ের কনেদের জন্য মেহেদী ডিজাইন বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই ডিজাইনগুলো সাধারণত খুব বিস্তারিত আর হাতে ভর্তি থাকে। এতে ঐতিহ্যবাহী নকশা, যেমন কলকা, ময়ূর আর কনের নামও থাকতে পারে।
এটি সাধারণত হাতের পিছনের দিকেও ছড়ানো থাকে। আর এটি কনের সাজকে পূর্ণতা দেয়। ব্রাইডাল হাতের পিছনের মেহেদী কনের জন্য একটি শুভ চিহ্ন বলে মনে করা হয়।
মেহেদী লাগানোর টিপস ও ট্রিকস
আমার বহু বছরের অভিজ্ঞতা থেকে কিছু টিপস আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি:
মেহেদী লাগানোর আগে হাত ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। পরিষ্কার হাত রঙ ভালোভাবে শুষে নেয়।
মেহেদী লাগানোর পর অন্তত ৪-৬ ঘণ্টা শুকাতে দিন। ভালো রঙের জন্য আরও বেশি সময় লাগতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে সারারাত রেখে দিতে পছন্দ করি।
শুকানোর পর মেহেদী তুলতে কোনো তেল বা লেবুর রস ব্যবহার করুন। জল দিয়ে ধুলে রঙ হালকা হতে পারে।
মেহেদী লাগানোর সময় একটি আরামদায়ক আসনে বসুন। যথেষ্ট আলো আছে কিনা দেখুন। ধৈর্য ধরুন, কারণ সুন্দর ডিজাইন করতে সময় লাগে।
মেহেদী লাগানোর পর চিনি ও লেবুর রসের মিশ্রণ হালকাভাবে লাগান। এতে রঙ আরও গাঢ় হয়। এটি আমার এক মেহেদী শিল্পী বন্ধুর কাছ থেকে শেখা দারুণ একটি কৌশল।
এই টিপসগুলো আপনার মেহেদী অভিজ্ঞতাকে আরও সহজ আর আনন্দময় করে তুলবে। হাতের পিছনের মেহেদী করার সময় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলে ফলাফল আরও ভালো হবে।
হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইনের জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ
হাতের পিছনের মেহেদী করার জন্য কিছু দরকারি জিনিস হাতের কাছে থাকা উচিত। এর মধ্যে প্রধান হলো ভালো মানের মেহেদী কোণ। এছাড়াও, ডিজাইন করার জন্য কিছু ছোট ব্রাশ বা টুথপিক ব্যবহার করা যেতে পারে, যা সূক্ষ্ম কাজ করতে সাহায্য করে।
একটি নরম কাপড় বা টিস্যু পেপার অতিরিক্ত মেহেদী মোছার জন্য কাজে আসবে। এই উপকরণগুলো হাতের পিছনের মেহেদী প্রক্রিয়াকে আরও সুবিধাজনক করে তোলে।
Conclusion
আশা করি এই ব্লগ পোস্টটি আপনাদের হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা দিতে পেরেছে। বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন আর আমার দেওয়া টিপস অনুসরণ করে আপনারা নিজেরাই আপনার হাতকে আরও সুন্দর করে তুলতে পারবেন। মনে রাখবেন, হাতের পিছনের মেহেদী একটি শিল্প। আর এর চর্চা আপনাকে নিখুঁত করে তুলবে।
এই ব্লগ পোস্টে আমরা “হাতের পিছনের মেহেদী ডিজাইন” নিয়ে বিস্তারিত কথা বলেছি। এখানে সহজ থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী, অ্যারাবিক, ফ্লোরাল এবং ম্যান্ডালা ডিজাইন পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের হাতের পিছনের মেহেদী তুলে ধরা হয়েছে।
